ডাই হার্ড ৪

লেন ওয়াইজম্যান পরিচালিত ২০০৭ সালের একটি আমেরিকান অ্যাকশন চলচ্চিত্র

ডাই হার্ড ৪ (ইংরেজি ভাষায়: Live Free or Die Hard) লেন ওয়াইজম্যান পরিচালিত ২০০৭ সালের একটি আমেরিকান অ্যাকশন চলচ্চিত্র। এটি ডাই হার্ড সিরিজের ৪র্থ চলচ্চিত্র। এতে অভিনয় করেছেন ব্রুস উইলিস, মেরি এলিজাবেথ উইনস্টেড সহ আরো অনেকে।

লীভ ফ্রি অর ডাই হার্ড
ডাই হার্ড ৪
প্রেক্ষাগৃহে মুক্তিপ্রাপ্ত পোস্টার
পরিচালকলেন ওয়াইজম্যান
প্রযোজকমাইকেল ফোটরেল
চিত্রনাট্যকারমার্ক বোমব্যাক
কাহিনিকার
  • মার্ক বোমব্যাক
  • ডেভিড মার্কোনি
উৎস
  • জন কার্লিন কর্তৃক 
    "অ্য ফেয়ারওয়েল টু আর্মস"
  • রডেরিক থোর্প কর্তৃক 
    Characters
শ্রেষ্ঠাংশে
সুরকারমার্কো বেল্টরামি
চিত্রগ্রাহকসিমন ডাগান
সম্পাদকনিকোলাস ডি টোথ
প্রযোজনা
কোম্পানি
  • কিয়ানি এন্টাপ্রাইস
  • দান ইন্টারটেইনমেন্ট
  • ইনজেনিয়াস ফিল্ম পার্টনার
পরিবেশক২০ সেঞ্চুরি ফক্স
মুক্তি২৭ জুন, ২০০৬
স্থিতিকাল১২৯ মিনিট[১]
দেশযুক্তরাষ্ট্র
ভাষাইংরেজি
নির্মাণব্যয়$১১০ মিলিয়ন[১]
আয়$৩৮৩,৫৩১,৪৬৪[১]

কাহিনী সম্পাদনা

এফবিআই সাইবার ডিভিশন সাইবার হুমকি সংক্রান্ত তদন্ত করতে কিছু কম্পিউটার হ্যাকারকে ট্রেক করে তাদের কয়েকজনকে মৃত অবস্থায় পায়। অন্যদের জিঞ্গাসাবাদ করার জন্য তারা নিউয়ার্ক শহরের পুলিশ ডিপার্টমেন্টের গোয়েন্দা জন ম্যাকক্লেইনকে (ব্রুস উইলিস) কম্পউটার হ্যাকার ম্যাথিও “ম্যাট” ফেরেলকে ধরে আনতে বলে। ম্যাকক্লেইন পৌঁছে ম্যাটকে সাইবার সন্ত্রাসী মাই লিনের ভাড়াটে খুনিদের হাত থেকে রক্ষা করে। মাই লিন তার প্রেমিক ও বস থমাস গেব্রিয়েলের হয়ে কাজ করে। ওয়াশিংটনে যাওয়ার পথে ম্যাট ম্যাকক্লেইনের কাছে ব্যাখ্যা করে সে অনেক টাকার বিনিময়ে মাই লিনকে একটি সিকিউরিটি কোড লিখে দিয়েছিল।

তারা ওয়াশিংটনে পৌঁছার পর থমাস গেব্রিয়েল তার অনুগত কম্পিউটার হ্যাকারদের ককম্পিটার নিয়ন্ত্রিত যোগাযোগ ব্যবস্থা ও শেয়ার বাজের নিয়ন্ত্রণ নিতে নির্দেশ দেয়। একই সাথে তারা স্যাটেলাইট টেলিভিশন চ্যানেলে আমেরিকাকে হুমকি দিয়ে একটি ভিডিও সম্প্রচার করে। ফ্যারেল বুঝতে পারে এই আক্রমণ হলো “ফায়ার সেল” যার মাধ্যমে কম্পিউটার নিয়ন্ত্রিত সকল ব্যবস্থার নিয়ন্ত্রণ নেয়া যাবে। ম্যাকক্লেইন এফবিআই এর অন্য সদস্যদের নিয়ে ফ্যারেলকে নিরাপদ এফবিআই অফিসে নিয়ে জিঞ্গাসাবাদ করার জন্য যাওয়ার সময় মাই লিন হ্যাক করা যোগাযোগ ব্যবস্থার সিসি ক্যামেরা ব্যবহার করে জানতে পারে তারা কোথায় আছে ও একটি হেলিকাপ্টার পাঠিয়ে দেয় তাদের হত্যা করার জন্য।

ম্যাকক্লেইন একটি ভাঙ্গা পুলিসের গাড়ি দিয়ে হেলিকাপ্টারটি ধ্বংস করে। ম্যাকক্লেইন ও ফ্যারেল বেঁচে যায় ঠিক তখন গেব্রিয়েল জনগণের মনে ভীতি সঞ্চারের জন্য দ্বিতীয় সম্প্রচার শুরু করে। যুক্তরাষ্ট্রের ক্যাপিটাল ভবন ধ্বংস করার একটি ভূয়া ভিডিও প্রচার করে। ফ্যারেল বুঝতে পারে ফায়ার সেলের পরবর্তী হামলা ওয়েস্ট ভার্জেনিয়ার শক্তি উৎপাদন কেন্দ্রে।

এদিকে মাইয়ের নেতৃত্তে একটি দল শক্তি উৎপাদন কেন্দ্রের গার্ডদের হত্যা করে ভেতরে প্রবেশ করে। ম্যাকক্লেইন তাদের সকলেকে হত্যা করে। গেব্রিয়েল প্রেমিকাকে হত্যা করার পর, গেব্রিয়েল শক্তি উৎপাদন কেন্দ্রের রিমোট কন্ট্রোল ব্যবহার করে সেখানে গ্যাসের মাধ্রমে বিস্ফোরন ঘটায়। পুরো ভবন বিস্ফোরিত হওয়ার পূর্বেই তারা ভবন থেকে ভবন থেকে বের হয়ে আসেতে সক্ষম হয়।

ফ্রারেল ম্যাকক্লেইনকে বাল্টিমোরের কম্পিউটার হ্যাকার ফ্রেডরিক “ওয়ারলক” কালোদিসের কাছে নিয়ে যায়। ওয়ারলক তার কম্পিউটার ব্যবহার করে গেব্রিয়েলের ঠিকানা বের করে এবং ভিডিও কলের সাহায্যে ম্যাট ও ম্যাকক্লেইনের সাথে কথা বলে। ম্যাকক্লেইন ও ম্যাট দুজন মিলে ম্যাকক্লেইনের মেয়ে লুসিকে উদ্ধার করতে যায় যে বর্তমানে গেব্রিয়েলের কাছে বন্দি আছে। কিন্তু তারা পৌঁছার পর গেব্রিয়েল ম্যাট ও লুসিকে নিয়ে পালিয়ে একটি ওয়ারহাউজে চলে যায়।

ম্যাকক্লেইন পিছু নিয়ে ওয়ারহাউজে চলে আসে এবং ম্যাট ও লুসিকে উদ্ধার করে এবং গেব্রিয়েলকে হত্যা করে। এর পরপরই এফবিআই ঘটনাস্থলে পৌঁছে ম্যাট ও ম্যাকক্লেইনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে হাসপাতালে পাঠিয়ে দেয়।

চরিত্রসমূহ সম্পাদনা

চলচ্চিত্রায়ন ও আহত সম্পাদনা

 
বাল্টিমোরে শ্যূটিং এর সময় উইলিস, জাস্টিন লং, লেন ওয়াইজম্যান

লীভ ফ্রি অর ডাই হার্ড চলচ্চিত্রের শ্যূটিং শুরু হয় ২৩ সেপ্টেম্বর ২০০৬ সালে বাল্টিমোর, ম্যারি্যোন্ডে।[৪] আটটি ভিন্ন ভিন্ন সেট তৈরি করা হয়েছিল ও বড় সাউন্ড স্টেজ তৈরি করা হয়েছিল বিভিন্ন দৃশ্যের শব্দ ধারণ করার জন্য।[৫] ছবির শেষ একটি দৃশ্যের জন্য ১৮টি মাইক্রোফোন ব্যবহার করা হয়েছিল যাতে গাড়ির শব্দ ও বিভিন্ন বিষ্ফোরনের শব্দ ভালোভাবে শোনা যায়।

 
শ্যূটিং এর সময় এফবিআই এর একটি গাড়ি ব্যবহার করা হয়

২৪ জানুয়ারি, ২০০৭ সালে উইলিস একটি অ্যাকশন দৃশ্য করার সময় অহত হন।ম্যাগি কিউ এর স্ট্যান্ট ডাবল যখন হিল জুতা পরে উইলিসের ডান চোখে আঘাত করে তখন তিনি তার চোখে আঘাত পান। প্রথমে উলিস তেমন কিছু মনে করেননি কিন্তু যখন ওয়াইজম্যান পরীক্ষা করে দেখে তখন দেখা যায় আঘাত অনেক গুরতর। ডিভিডির ভাষ্যে ওয়াইজম্যান বলেন তিনি উলিসের হাড় দেখতে পেয়েছিলেন। উইলিসকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় ও তার ভ্রুতে সাতটি সেলাই দেওয়া হয়।

চলচ্চিত্রটির শ্যূাটিং এর সময় ২০০ থেকে ২৫০ জন স্টেন্ট ডাবল ব্যবহার করা হয়। ব্রুস উইলিসের ডাবল ল্যারি রিপেনক্রোজার মারত্বকভাবে আহত হয়। ল্যারি আহত হওয়ার পর অনির্দিষ্টকালের জন্য শ্যূাটিং বন্ধ করে দেওয়া হয়। ল্যারিকে হাসপাতালে দেখতে আসা আত্মীয়দের হোটেল বিল ব্রুস উইলিস ব্যক্তিগতভাবে পরিশোধ করেন।[৬]

বক্স অফিস সম্পাদনা

মুক্তির পর লীভ ফ্রি অর ডাই হার্ড বক্স অফিসে ২ নম্বর ও এর মুক্তির প্রথম দিনই ৩,১৭২ টি সিনেমা হল থেকে মোট $৯.১ মিলিয়ন ডলার আয় করে।[৭] ডাই হার্ড সিরিজের অন্য চলচ্চিত্র থেকে এটি মুক্তির প্রথম দিনে বেশি আয় করার রেকর্ড গড়ে। প্রথম সপ্তাহে এ ছবিটির আয় হয় মোট $৩৩ মিলিয়ন (বুধবার ও বৃহস্পতিবারের গননায় $৪৮.৩ মিলিয়ন)।[৮] ছবিটি যুক্তরাষ্ট্রে $১৩৪.৫ মিলিযন ও বাইরে $২৪৯.০ সহ মোট $৩৮৩.৫ মিলিয়ন আয় করে। এটি ডাই হার্ড সিরিজের সবচেয়ে ব্যবসাসফল চলচ্চিত্র[৯] ও ২০০৭ সালের সবচেয়ে উর্দ্বমুখী চলচ্চিত্রের তালিকায় ১২তম।

গানসমূহ সম্পাদনা

লীভ ফ্রি অর ডাই হার্ড স্কোর
মার্কো বেল্টরামি
কর্তৃক সাউন্ডট্রেক
মুক্তির তারিখজুলাই ২, ২০০৭
দৈর্ঘ্য৬৩:০৬
সঙ্গীত প্রকাশনীভারেসে সারবেন্ডি
  1. "আউট অফ বুলেটস" (১:০৮)
  2. "শ্যূাটআউট" (৩:৪১)
  3. "লিভিং দ্য এপার্টম্যান্ট" (২:০৮)
  4. "ডেড হ্যাকারস" (১:৩১)
  5. "ট্রাফিক জ্যাম" (৪:১৩)
  6. "ইট’স অ্য ফায়ার সেল" (২:৫৭)
  7. "দ্য ব্রেক-ইন" (২:২৮)
  8. "ফ্যারেল টু ডি.সি." (৪:৩৬)
  9. "কপ্টার চেজ" (৪:৪১)
  10. "ব্লেকআউট" (২:০৩)
  11. "ইলিগাল ব্রডকাস্ট" (৩:৪৮)
  12. "হারি আপ!" (১:২৩)
  13. "দ্য পাউয়ার প্লেন্ট" (২:০১)
  14. "ল্যান্ডিং" (২:২৮)
  15. "কোল্ড কাটস" (২:০০)
  16. "ব্রেক অ্য নেক" (২:৪৭)
  17. "ফ্যারেল ইজ ইন" (৪:২২)
  18. "দ্য এফ-৩৫" (৪:১৩)
  19. "আফটারম্যাথ" (৩:১২)
  20. "লীভ ফ্রি অর ডাই হার্ড" (২:৫৬)

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "Live Free or Die Hard"Box Office Mojo। সংগ্রহের তারিখ জুলাই ৯, ২০১১ 
  2. Freydkin, Donna। "'Die Hard' easy for Olyphant"USA Today। ২০১১-০৪-২৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৩-০২-২৮ 
  3. "Die Hard: Vendetta"। Metacritic। ১ নভেম্বর ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৩ 
  4. Weinberg, Scott (সেপ্টেম্বর ২১, ২০০৬)। "Bruce Willis Starts Shooting "Die Hard 4" — in Baltimore"। Rotten Tomatoes। জুন ৯, ২০০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৯ জুন ২০১৩ 
  5. Live Free or Die Hard-"Analog Hero in a Digital World: Making of Live Free or Die Hard" (Special Feature) (Collector's Edition DVD)। 20th Century Fox। ২০০৭। 
  6. Welkos, Robert W. (মে ২৫, ২০০৭)। "Defying death for real"Los Angeles Times। জুন ২৮, ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৯ জুন ২০১৩ 
  7. "Live Free or Die Hard-Daily Box Office"। Box Office Mojo। সংগ্রহের তারিখ জুন ১০, ২০১৩ 
  8. "Live Free or Die Hard-Weekend Box Office"। Box Office Mojo। সংগ্রহের তারিখ জুন ১০, ২০১৩ 
  9. "Die Hard Series"। Box Office Mojo। এপ্রিল ৭, ২০১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ জুন ১০, ২০১৩ 

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা