জ্যাসিন্ট ভার্ডাগুয়ের

কাতালান লেখক, কবি

জ্যাসিন্ট ভার্ডাগুয়ের ই সান্টালো (কাতালান উচ্চারণ: [ʒəˈsim bərðəˈɣe]) (১৭ই মে, ১৮৪৫ – ১০ই জুন, ১৯০২[১][২]) কাতালান কবিদের মধ্যে অন্যতম শ্রেষ্ঠ কবি। কাতালান সাহিত্য ও সাহিত্য বিশিষ্টতার মধ্যে রেনেসাঁর যুগের অন্যতম প্রধান তিনি। জাতীয় রেনেসাঁ রোমান্টিক আন্দোলনে তিনি বিশেষ অবদান রাখেন। কাতালান জাতীয়তাবাদের অন্যতম ব্যক্তি বিশপ জোসেপ তোরাস ই বাগেস তাকে "কাতালান কবিদের মধ্যে রাজপুত্র" বলেন। সিন্টো ভার্ডাগুয়ের ঋত্বিক হিসেবে তার অবদানের জন্য তাকে মোঁসে বলেন।

জ্যাসিন্ট ভার্ডাগুয়ের
প্লাসা দ্য মোসেঁ জ্যাসিন্ট ভার্ডাগুয়ের-এ জ্যাসিন্ট ভার্ডাগুয়েরের মূর্তি
প্লাসা দ্য মোসেঁ জ্যাসিন্ট ভার্ডাগুয়ের-এ জ্যাসিন্ট ভার্ডাগুয়েরের মূর্তি
জন্ম(১৮৪৫-০৫-১৭)১৭ মে ১৮৪৫
ফোলগুয়েরোলেস, কাতালোনিয়া, স্পেন
মৃত্যুজুন ১০, ১৯০২(1902-06-10) (বয়স ৫৭)
ভ্যালাভিড্রেরা (বার্সেলোনা), কাতালোনিয়া, স্পেন
পেশাকবি, ঋত্বিক
সাহিত্য আন্দোলনরেনেসাঁ, রোমান্টিকরা
উল্লেখযোগ্য রচনাবলিকানিগো, এল' আটলান্টিডা

স্বাক্ষর
মারে দ্য দেউ দেল মন্ট-এ অবস্থিত কবির সম্মানজনক মূর্তি

জীবন সম্পাদনা

 
জ্যাসিন্ট ভার্ডাগুয়ের

তিনি ভিকের একটি শহর, ওসোনার কমারকার ফোলেকুয়েরোলসে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা জোসেপ ভার্ডাগুয়ের ই ওরডেইক্স (টাভেরনোলস, ১৮১৭ - ফোলগুরেলস, ১৮৭৬) এবং তার মাতা জোসেপ সান্তালো ই প্লেনস্‌ (ফোলগুরেলস, ১৮১৯-১৮৭১) তিনি আট সন্তানের (এদের মধ্যে তিনজন বেঁচে ছিল) মধ্যে তৃতীয় ছিলেন। ১৮৫৬ সালে ১১ বছর বয়সে তিনি ভিকের শিক্ষালয়ে প্রবেশ করেন। শিক্ষালয়ে প্রবেশ করা পর্যন্ত সে শহরের অন্যান্যদের মতই ছিল। তার সম্পর্কে যে গল্পগুলো প্রচলিত, সেই অনুযায়ী তিনি তার বুদ্ধিমত্তা ও সাহসের জন্য এবং তার বলিষ্ঠ গাত্রবর্ণর ফলে তার সহপাঠীদের থেকে পৃথক ছিলেন। তিনি কোনো আপাত ধর্মীয় পক্ষপাত ছাড়া সাধারণত সুষম সমবেদনা দেখিয়েছেন।

১৮৬৩ সালে ১৮ বছর বয়সে তিনি কান তোনার একটি পরিবারের শিক্ষক হিসেবে কাজ শুরু করেন এবং পড়াশোনা চালিয়ে যান। কান তোনা সান্ট মার্টি দ্য রিউডেপেরেস (আজকের কালডেটেনস্‌) -এর একটি জেলা। ১৮৬৫ সালেন তিনি বার্সেলোনার জোকস ফ্লোরালস— বা "ফুলসজ্জা খেলা"—কবিতা প্রতিযোগীতায় অংশ নেন এবং চারটি পুরস্কার লাভ করেন। পরের বছর জোকস ফ্লোরালস-এ তিনি দুইটি পুরস্কার লাভ করেন।[২]

২৪শে সেপ্টেম্বর, ১৮৭০ সালে তিনি ভিকের বিশল লুইস জোর্ডার ঋত্বিক পদ লাভ করেন এবং ঐ বছরেরই অক্টোবরে তিনি তিনি সেন্ট জোর্ডি আশ্রমে প্রথম মাস বলেন।[১] এরপর দিনি তিনি সেন্ট ফ্রান্সেস আশ্রমের (ভিকের নিকটবর্তী) দ্বিতীয় মাস বলেন।[১] ১৮৭১ সালের ১৭ই জানুয়ারি তার মা ৫২ বছর বয়সে মারা যান। পহেলা সেপ্টেম্বর তাকে ভিনোলস দ'ওরিস-এর বিশপ সহকারী করা হয় এবং তিন দিন পর তিনি ঐ পদে যোগ দেন।[১]

১৮৭৩ সালে তিনি মহান যীশু খ্রিস্টের প্যাশন (Passió de Nostre Senyor Jesucrist) প্রকাশ করেন। তিনি স্বাস্থ্যগত কারণে ভিনোলস দ'ওরিস ত্যাগ করেন এবং ভিকে যান। সেখানে তিনি রোসেলিন-এ যান এবং কানিগউ প্রথমবারের মত দেখেন। ডিসেম্বরে তিনি কোম্পানিয়া ট্রান্সাটলান্টিকায় যাজক হন কারণ তার স্বাস্থ্যগত কারণে তাকে সমুদ্রের হাওয়ার কাছে থাকতে বলা হয়েছে। তিনি কাদিজ-এর হাভানায় আবদ্ধ হন।

১৮৭৬ সালের ৮ই সেপ্টেম্বর ৬৫ বছর বয়সে তার পিতা পরলোকগমন করেন। কিউবা থেকে ফেরার সময় "কুইডাড কোন্ডাল" জাহাজে তিনি মহাকাব্য কবিতা এল' আটলান্টিডা শেষ করেন। নভেম্বরে তিনি একটি ভিক্ষা প্রতিষ্ঠানের যাজক হিসাবে মার্কুইসের কোমিলাসের প্রাসাদে প্রবেশ করেন।

১৮৭৭ সালে ৩২ বছর বয়সে একটি যাত্রা থেকে ফিরে আসার সময় জোকস ফ্লোরালস-এর বিচারক এল' আটলান্টিডার জন্য তাকে বার্সেলোনার ডিপুটেশন পুরস্কার দেন। এরপরই কবি হিসেবে তিনি বিখ্যাত হন।

১৮৭৮ সালে তিনি রোমে যাত্রা করেন। সেখানে তিনি পোপ ত্রয়োদশ লিওর সাথে একটি বিরাট শ্রোতাদল পান। তারা ভার্ডাগুয়েরের কবিতা এল আটলান্টিডা সম্পর্কে কথা বলেন। ১৮৮০ সালে জোকস ফ্লোরালস এ তিনটি পুরস্কার পাওয়ায় তাকে গাই সাবেরের মিস্ট্রে উপাধীতে ভূষিত করা হয়। একই বছরে তিনি মন্তসেরাট বইটি রচনা করেন।

১৮৮৩ সালে তিনি বার্সেলোনার গাঁথা (Oda a Barcelona) প্রকাশ করেন এবং বার্সেলোনার শহর সংস্থা বইটির হাজারো মুদ্রণ বের করে। ৩৯ বছর বয়সে তিনি প্যারিস, সুইজারল্যান্ড, জার্মানিরাশিয়া যান। ২১শে মার্চ, ১৮৮৬ সালে ৪১ বছর বয়সে তাকে রিপোলের আশ্রমে কাতালোনিয়ার কবি মুকুট পরানো হয়। তিনি কানিগো মহাকাব্যটি রচনা করেন এবং পবিত্র ভূমির দিকে এক তীর্থযাত্রা গড়ে তোলেন।

১৮৯৩ সালে ঋত্বিক হিসেবে তার কাজের সমালোচনার ফলে তিনি কোমিলাসের মার্কুইসের ভিক্ষার যাজক পদ থেকে সরে দাঁড়ান।[১] তার জন্য লা গ্লেভার আশ্রয়স্থল নির্ধারিত ছিল। একটি সময় ধরে তিনি যাজক হিসেবে তার অফিসে ছিনতাই হয় যদিও একে আবারও পুনরুদ্ধার করা হয়, ১৮৯৪ সালে রোসের দ্য তোর এল'এনিভেউস দেল বোন পাস্তোর বইদ্বয় প্রকাশিত হয়। ৩১শে মার্চ তিনি লা গ্লেভার আশ্রয়স্থল ত্যাগ করেন।

১৭ই মে ১৯০২ সালে, তার ৫৭তম জন্মদিনে তিনি ক্যারের আরাগোতে তার নিজ বাড়ি, ২৩৫, বার্সেলোনা (তখনকার ভিল-লা-জোয়ানা) তে ফিরে আসেন। ১০ই জুন ওখানেই তিনি মারা যান।[১] বর্তমানে বাড়িটি বার্সেলোনার শহর ইতিহাস জাদুঘর (এমইউএইচবিএ) গুলোর মধ্যে অন্যতম।

তাঁজে মন্টজুইক কবরখানা (Sud-Oest)তে দাফন করা হয়।[১]

উল্লেখযোগ্য কাজ সম্পাদনা

 
এমএনএসির) চোখে ভার্ডাগুয়ের

তার কিছু কাজ হলঃ

দৃশ্যসম্বলিত মূলগায়েন এবং দোহারগণ কর্তৃক গীত পালাগান, যার সুর ম্যানুয়েল দ্য ফাল্লা করেন এবং দ্য ফাল্লার মৃত্যুর পর আরনেস্টো হাফফেটার শেষ করেন, মূলত আর্ডাগুয়েরের এল'আটলান্টিডার উপর ভিত্তি করে তৈরি। ম্যানুয়ের দ্য ফাল্লা একে অর্কেস্ট্রোর জন্য সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ কাজ হিসেবে অভিহিত করেন।

কাতালানোয়ার তার কর্তৃক রচিত আরো কিছু বিখ্যাত কাজ হল এল'এমিগ্রান্ট ("মধুর কাতালোনিয়া, আমার হৃদয়ের দেশ...")।

ভার্ডাগুয়েরের কাজগুলো ইংরেজিতে জ্যাসিন্ট ভার্ডাগুয়েরের নির্বাচিত কবিতাঃ দ্বিভাষীক মুদ্রণ যা রোনাল্ড পাপ্পো কর্তৃক সম্পাদিত এবং অনুদিত। এতে র‍্যামন পিনোয়াল ই তোরেন্টস ভূমিকা লেখেন এবং শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয় প্রেস প্রকাশ করে ২০০৭ সালে।[৩]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "Jacint Verdaguer"। ৬ জুন ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৭ মার্চ ২০১৪ 
  2. "Biografia" 
  3. "The University of Chicago Press Books" 

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা

টেমপ্লেট:Wikisource-lang টেমপ্লেট:Wikisource-lang