জন আর্চিবল্ড হুইলার

মার্কিন পদার্থবিজ্ঞানী

জন আর্চিবল্ড হুইলার (ইংরেজি ভাষায়:John Archibald Wheeler) (৯ই জুলাই, ১৯১১ - ১৩ই এপ্রিল, ২০০৮) প্রখ্যাত মার্কিন তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞানী। তিনি আপেক্ষিকতার তত্ত্ব নিয়ে আইনস্টাইনের সাথে কাজ করেছিলেন এবং সাধারণ আপেক্ষিকতা নিয়ে আইনস্টাইনের স্বপ্ন পূরণের জন্য কাজ করেছিলেন। তিনি নিলস বোরের সাথে নিউক্লিয় ফিশন নিয়েও গবেষণা করেন। তিনি ব্ল্যাক হোল, ওয়ার্ম হোল এবং It from Bit নামগুলোর প্রণেতা হিসেবে পরিচিত। তার কর্মজীবনের অধিকাংশ সময়ই প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করে কেটেছে।

জন আর্চিবল্ড হুইলার
১৯৮৫ সালে হুইলার
জন্ম৯ই জুলাই, ১৯১১
মৃত্যু১৩ই এপ্রিল, ২০০৮ (৯৬ বছর)
জাতীয়তা যুক্তরাষ্ট্র
মাতৃশিক্ষায়তনজনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়
পরিচিতির কারণনিউক্লীয় ফিশন
সাধারণ আপেক্ষিকতা
মানবীয় তত্ত্ব
পুরস্কার
বৈজ্ঞানিক কর্মজীবন
কর্মক্ষেত্রপদার্থবিজ্ঞান
প্রতিষ্ঠানসমূহইউনিভার্সিটি অব নর্থ ক্যারোলাইনা অ্যাট চ্যাপেল হিল
প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়
ইউনিভার্সিটি অব টেক্সাস অ্যাট অস্টিন
ডক্টরাল উপদেষ্টাKarl Herzfeld
ডক্টরেট শিক্ষার্থীDemetrios Christodoulou
রিচার্ড ফাইনম্যান
জ্যাকব বেকেনস্টাইন
Robert Geroch
Bei-Lok Hu
John R. Klauder
চার্লস মিসনার
Milton Plesset
কিপ থর্ন
আর্থার উইটম্যান
হিউ এভারেট
Bill Unruh
Arkady Kheyfets
ওয়ার্নার এ মিলার

জীবনী সম্পাদনা

জন আর্চিবল্ড হুইলার ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্যের জ্যাকসনভিলে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯২৬ সালে বাল্টিমোর সিটি কলেজ হাই স্কুল থেকে স্নাতক হন। ১৯৩৩ সালে ডক্টরেট ডিগ্রি অর্জন করেন জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। কার্ল হেরৎসফিল্ডের অধীনে করা তার অভিসন্দর্ভের বিষয় ছিল হিলিয়ামের শোষণ এবং আলোক বিকিরণ বিষয়ক তত্ত্ব।

কর্মজীবন শুরু করেছিলেন ইউনিভার্সিটি অব নর্থ ক্যারোলাইনা অ্যাট চ্যাপেল হিল বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদানের মাধ্যমে। ১৯৩৮ সালে তিনি প্রিন্সটন ইউনিভার্সিটিতে যোগদান করেন। ১৯৩৮ থেকে ১৯৭৬ সাল পর্যন্ত এই বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করেছেন। শিক্ষকতা থেকে অবসর গ্রহণের পর ১৯৭৬ সালে ইউনিভার্সিটি অব টেক্সাস অ্যাট অস্টিন-এর সেন্টার ফর থিওরেটিক্যাল ফিজিক্সে যোগ দেন। ১৯৮৬ সাল পর্যন্ত তিনি এখানে কর্মরত ছিলেন। অধ্যাপক হুইলারের অধীনে স্নাতক ডিগ্রি অর্জনকারী ছাত্রদের মাঝে আছেন রিচার্ড ফাইনম্যান, কিপ থর্ন এবং হিউ এভারেট। অনেক পণ্ডিতই যেখানে শিক্ষকতার থেকে গবেষণায় মনোনিবেশ করেছেন বেশি সেখানে শিক্ষকতার উপর বরাবরই বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন হুইলার। তিনি উৎসাহ, অনুপ্রেরণা এবং কল্পনার মাধ্যমে শিক্ষা দিতেন। জটিল ধারণাগুলোকে সহজ ভাষায় ব্যক্ত করায় বিশেষ পারঙ্গম ছিলেন। অনেক খ্যাতি অর্জনের পরও তিনি নতুন ছাত্রদের পড়ানো বন্ধ করেননি। বিশ্ববিদ্যাললের প্রথম বর্ষ থেকে শুর করে সবাইকেই সমান গুরুত্বের সাথে পড়িয়ে গেছেন।

হুইলার তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞানে বিশেষ অবদান রেখেছেন। ১৯৩৭ সালে তিনি এস-ম্যাট্রিক্স এ প্রচলন করেন। কণা পদার্থবিজ্ঞানে এই ম্যাট্রিক্স একটি আবশ্যকীয় উপাদান হয়ে উঠে। নিউক্লীয় বিভাজন তত্ত্বের অগ্রদূতদের মধ্যে তিনি অন্যতম। এক্ষেত্রে নিল্‌স বোরএনরিকো ফের্মির সাথে তার নামও উচ্চারিত হয়। ১৯৩৯ সালে নিউক্লীয় বিভাজনের লিকুইড ড্রপ মডেল তৈরীতে তিনি নিল্‌স বোরকে সহায়তি করেন।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় অন্যান্য অনেক পদার্থবিজ্ঞানীর মত তিনিও শিক্ষকতা বাদ দিয়ে নিউক্লীয় বোমা নির্মাণের উদ্দেশ্যে ম্যানহাটন প্রকল্পে যোগ দেন। হুইলার এই প্রকল্পের হ্যানফোর্ড সাইটে কাজ করতেন। বোমাতে ব্যবহৃত প্লুটোনিয়াম তৈরির উদ্দেশ্যে এই সাইটে নিউক্লীয় চুল্লী বানানো হয়েছিল। এই সাইটের উপকরণ দিয়ে নির্মিত বোমাটি নিক্ষেপ করা হয়েছিল জাপানের নাগাসাকিতে। হ্যানফোর্ডে বি-পাইল নামক প্রথম চুল্লী নির্মাণের পূর্বেই হুইলার অনুমান করেছিলেন, বিভাজনের উৎপাদের সাথে জমা হওয়া বিষাক্ত পদার্থগুলো নিউট্রন শোষণের মাধ্যমে চলমান নিউক্লীয় শিকল বিক্রিয়াকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। অর্ধায়ু ক্ষয়ের হার গণনার মাধ্যমে তিনি এটাও বের করেছিলেন যে, এই নিউট্রন শোষণের জন্য সবচেয়ে বেশি দায়ী জেননের একটি সমাণু, জেনন-১৩৫। ম্যানহাটন প্রকল্প ছাড়াও হুইলার ম্যাটারহর্ন বি প্রকল্পে যোগ দেন এবং এএ মাধ্যমে মার্কিন হাইড্রোজেন বোমা নির্মাণে ভূমিকা রাখেন।

সম্মাননা সম্পাদনা

ন্যাশনাল মেডেল অব সায়েন্স, ১৯৭০

হুইলারের রচনাসমূহ সম্পাদনা

  • Geometrodynamics (১৯৬২)
  • Gravitation (সেপ্টেম্বর ১৯৭৩)
  • Some Men and Moments in the History of Nuclear Physics: The Interplay of Colleagues and Motivations (১৯৭৯)
  • A Journey Into Gravity and Spacetime (১৯৯০)
  • Spacetime Physics: Introduction to Special Relativity (১৯৯২)
  • At Home in the Universe (১৯৯৪)
  • Geons, Black Holes, and Quantum Foam: A Life in Physics (১৯৯৮)
  • Exploring Black Holes: Introduction to General Relativity (২০০০)
  • Law Without Law

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা