খুংরিকাশি বা ল্যারিঞ্জোট্র্যাকিওব্রঙ্কাইটিস (ইংরেজি: Croup বা laryngotracheobronchitis) এক প্রকারের শ্বাসপ্রশ্বাসের সংক্রমণ, যা শ্বাসনালির উপরিভাগে ভাইরাস সংক্রমণের ফলে হয়৷ এই সংক্রমণের ফলে গলার ভেতরটা ফুলে যায়৷ এই ফোলাভাব স্বাভাবিক শ্বাসপ্রশ্বাসে বাধা সৃষ্টি করে; খুংরিকাশি অর্থাৎ ক্রুপকাশির উপসর্গে "খকখক শব্দ"কাশি, স্ট্রিডর (তীক্ষ্ণ শোঁ শোঁ শব্দ), এবং কর্কশতাথাকে৷ খুংরিকাশির উপসর্গ সামান্য, সহনীয় বা গুরুতর হতে পারে, এবং প্রায়ই রাত্রে এই উপসর্গ বেড়ে যায়৷ মুখ দ্বারা সেবনযোগ্য স্টেরয়েড এর একটামাত্র ডোজ দিয়ে এই অবস্থার চিকিৎসা করা যায়৷ কখনও কখনও খুব গুরুতর ক্ষেত্রে এপিনেফ্রিন ব্যবহার করা হয়৷ বিরল ক্ষেত্রে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়৷

খুংরিকাশি
বিশেষত্বফুসফুসবিদ্যা, শিশুচিকিৎসাবিজ্ঞান উইকিউপাত্তে এটি সম্পাদনা করুন

লক্ষণ ও উপসর্গ দেখে খুংরিকাশি নির্ণয় করা হয়। উপসর্গের আরো গুরুতর কারণ রয়েছে (উদাহরণস্বরূপ, এপিগ্লটাইটিস অথবা শ্বাসনালিতে বিজাতীয় জিনিস)৷ বেশির ভাগ সময়, আরো অনুসন্ধান - যেমন রক্ত পরীক্ষা, এক্স-রে এবং কালচার করানোর প্রয়োজন হয় না৷ খুংরিকাশি পরিচিত সমস্যা এবং সাধারণত ৬ মাস থেকে ৫-৬ বছর বয়সের প্রায় ১৫% শিশু ও ছোট ছেলেমেয়েদের মধ্যে এটা দেখা যায়৷ কিশোর ও প্রাপ্তবয়স্করা খুব কমই খুংরিকাশিতে আক্রান্ত হয় ৷

লক্ষণ ও উপসর্গ সম্পাদনা

খুংরিকাশির উপসর্গে "খকখক শব্দ" কাশি, স্ট্রিডর(শ্বাসপ্রশ্বাস নেওয়ার সময় সাধারণত এই সুতীক্ষ্ণ শব্দ হয়), কর্কশভাব, এবং শ্বাসকষ্ট থাকতে পারে, সাধারণত রাত্রে এর আরো অবনতি হয়৷[১] বলা হয় যে এই "খকখক" কাশি প্রায়ই সীল বা সী লায়নএর ডাকের মত শোনায়৷ [২] কান্নাকাটি করলে এই শোঁ শোঁ শব্দ আরো বেড়ে যেতে পারে, কেননা শোঁ শোঁ শব্দের অর্থ শ্বাসনালি সঙ্কীর্ণ হয়ে পড়েছে৷ খুংরিকাশির আরো অবনতি হলে এই শোঁ শোঁ শব্দ কমে যেতে পারে৷ [১]

অন্যান্য উপসর্গের মধ্যে রয়েছে জ্বর, করাইজা (সাধারণ সর্দির মত উপসর্গ), এবং বুকের হাড় পাঁজরা দেখা যায়৷ [১][৩] মুখ দিয়ে লালা পড়া বা অসুস্থ চেহারা দেখে অন্যান্য চিকিৎগত অবস্থার ইঙ্গিত পাওয়া যায়৷ [৩]

কারণ সম্পাদনা

সাধারণত ভাইরাস সংক্রমণের ফলে খুংরিকাশি হয় বলে মনে করা হয়৷[১][৪] কেউ কেউ তীব্র ল্যারিঞ্জোট্র্যাকিয়াইটিস, আকস্মিক আক্ষেপসহ খুংরিকাশি, ল্যারিঞ্জিয়াল ডিপথেরিয়া, ব্যাক্টেরিয়াল ট্র্যাকিয়াইটিস, ল্যারিঞ্জোট্র্যাকিওব্রঙ্কাইটিস এবং ল্যারিঞ্জোট্র্যাকিওব্রঙ্কোনিউমোনাইটিস বোঝাতেও এই শব্দটি ব্যবহার করেন৷ প্রথম দুটি রোগাবস্থা ভাইরাসের কারণে হয় এবং তাতে অপেক্ষাকৃত সামান্য উপসর্গ থাকে, শেষ চারটি ব্যাক্টেরিয়ার কারণে হয় এবং সাধারণত অধিক গুরুতর হয়৷ [২]

ভাইরাসঘটিত সম্পাদনা

৭৫% ক্ষেত্রে খুংরিকাশির জন্য মূলত টাইপ ১ এবং ২ প্যারাইনপ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস দায়ী হয়৷ [৫] কখনও কখনও অন্যান্য ভাইরাসের ফলেও খুংরিকাশি হতে পারে, যথা ইনফ্লুয়েঞ্জা এ ও বি, হাম, অ্যাডেনোভাইরাস এবং রেসপিরেটারি সিনসিশিয়াল ভাইরাস (আরএসভি)৷[২] তীব্র ল্যারিঞ্জোট্র্যাকিয়াইটিসের জন্য যে শ্রেণীর ভাইরাস দায়ী সেই একই শ্রেণীর ভাইরাসের ফলে আকস্মিক খুংরিকাশি (খকখক কাশিসহ খুংরিকাশি) হয়, তবে তাতে সংক্রমণের পরিচিত লক্ষণগুলি (যেমন জ্বর, গলা ব্যথা, এবং শ্বেত রক্তকণিকা সংখ্যা)র বৃদ্ধি থাকে না৷[২] উভয় ক্ষেত্রে একই ধরনের চিকিৎসা করা হয়, এবং চিকিৎসার প্রতিক্রিয়া অনুরূপ হয়৷ [৫]

ব্যাক্টেরিয়াঘটিত সম্পাদনা

ব্যাক্টেরিয়াঘটিত খুংরিকাশিকে ল্যারিঞ্জিয়াল ডিপথেরিয়া, ব্যাক্টেরিয়াল ট্র্যাকি‍য়াইটিস, ল্যারিঞ্জোট্র্যাকিওব্রঙ্কাইটিস এবং ল্যারিঞ্জোট্র্যাকিওব্রঙ্কোনিউমোনাইটিসে বিভক্ত করা যায়৷[২] করিনেব্যাক্টেরিয়াম ডিপথেরিয়া এর ফলে ল্যারিঞ্জিয়াল ডিপথেরিয়া হয়, আবার ব্যাক্টেরিয়াল ট্র্যাকিয়াইটিস, ল্যারিঞ্জোট্র্যাকিওব্রঙ্কাইটিস এবং ল্যারিঞ্জোট্র্যাকিওব্রঙ্কোনিউমোনাইটিস প্রারম্ভিকভাবে ভাইরাসের ফলে হলেও, পরে ব্যাক্টেরিয়া সংক্রমণ ঘটে৷ এর জন্য দায়ী সবচেয়ে সুপরিচিত ব্যাক্টেরিয়া হল স্ট্যাফাইলোকোকাস অরিয়াস, স্ট্রেপ্টোকোকাস নিউমোনিয়া, হিমোফিলাস ইনফ্লুয়েঞ্জা, এবং মরাক্সেলা ক্যাটারালিস[২]

দেহ-তন্ত্রে রোগজনিত বিকৃতি সম্পাদনা

এই ভাইরাস সংক্রমণের ফলে গলনালী, শ্বাসনালি, এবং বড় শ্বাসনালিগুলি শ্বেত রক্ত কণিকা দ্বারা স্ফীত হয়৷ [৪] এই ফুলে যাওয়ার ফলে শ্বাসপ্রশ্বাস নেওয়া কষ্টকর হয়ে উঠতে পারে৷[৪]

রোগনির্ণয় সম্পাদনা

Westley স্কোর: খুংরিকাশি তীব্রতার শ্রেণীভুক্তকরণ[৫][৬]
বৈশিষ্ট্য এই বৈশিষ্ট্যের জন্য নিয়োজিত পয়েন্টের সংখ্যা
Chest wall
retraction
None Mild Moderate Severe
Stridor None With
agitation
At rest
Cyanosis None With
agitation
At rest
Level of
consciousness
Normal Disoriented
Air entry Normal Decreased Markedly decreased

খুংরিকাশির ক্ষেত্রে লক্ষণ এবং উপসর্গ দেখে রোগনির্ণয় করা হয়৷[৪] প্রথম কাজটি হল, শ্বাসনালির উপরিভাগে বাধা সৃষ্টি করতে পারে এমন অন্যান্য অবস্থার সম্ভাবনা দূর করা, বিশেষত এপিগ্লটাইটিস, শ্বাসনালিতে আটকে থাকা পদার্থ, সাবগ্লটিক স্টেনোসিস, অ্যাঞ্জিওইডিমা, রেট্রোফ্যারিঞ্জিয়াল অ্যাবসেস, এবং ব্যাক্টেরিয়াল ট্র্যাকিয়াইটিস৷[২][৪]

সচরাচর গলার এক্স-রে করা হয় না,[৪] তবে যদি তা করা হয়, তাহলে গলনালীর সঙ্কীর্ণ হয়ে আসা দেখা যাবে, একে স্টিপল সাইনবলা হয়, কেননা ক্রমশ সঙ্কীর্ণ হওয়া এই আকার গির্জার চূড়ার মত দেখায় ৷ অর্ধেক কেসে এই স্টিপল সাইন অর্থাৎ চূড়ামত দেখা যায় না৷ [৩]

রক্ত পরীক্ষাএবং ভাইরাসের কালচার (ভাইরাস পরীক্ষা) করার ফলে শ্বাসনালিতে অযথা অস্বস্তি হতে পারে৷[৪] যদিও ন্যাসোফ্যারেঞ্জিয়াল অ্যাসপিরেশন (টিউবের সাহায্যে নাক থেকে শ্লেষ্মা টেনে বার করার পদ্ধতি) দ্বারা সংগ্রহ করা ভাইরাসের কালচার করে যথার্থ কারণ সুনিশ্চিত করা যায়, তবে সাধারণত যারা গবেষণার কাজ করছেন শুধু তারা এইভাবে কালচার করেন৷[১] যদি প্রথাগত চিকিৎসা দ্বারা কারো রোগাবস্থার উন্নতি না হয়, ব্যাক্টেরিয়ার সন্ধান করতে আরো কয়েকটি পরীক্ষা করা যায়৷[২]

প্রখরতা সম্পাদনা

খুংরিকাশির তীব্রতার শ্রেণী বিভাজন করার সবচেয়ে সুপরিচিত পদ্ধতি ওয়েস্টলি স্কোর৷ তবে, চিকিৎসার তুলনায় গবেষণার জন্য এই পরীক্ষা করা হয়৷[২] এটি পাঁচটি উপাদানে বিভক্ত পয়েন্টের সমষ্টিঃ সচেতনতার স্তর, সায়ানোসিস (অক্সিজেনের অভাবে বিবর্ণ ত্বক), স্ট্রিডর, বায়ু প্রবেশ, এবং সঙ্কোচন৷ [২] প্রতিটি বৈশিষ্ট্যের জন্য ধার্য করা পয়েন্ট ডানদিকের তালিকায় দেখানো হয়েছে, এবং চূড়ান্ত স্কোর ০ থেকে ১৭ হতে পারে৷[৬]

  • A total score of ≤2 indicates mild croup. The person can have barking cough and hoarseness, but there is no stridor (wheezing) at rest.[৫]
  • A total score of 3–5 is classified as moderate croup — the person has wheezing, with few other signs.[৫]
  • A total score of 6–11 is severe croup. It also presents with obvious stridor, but also chest wall indrawing.[৫]
  • A total score of ≥12 means respiratory failureis possible. The barking cough and wheezing may no longer be present at this stage.[৫]

জরুরি বিভাগে ভর্তি ৮৫% শিশুর ক্ষেত্রে রোগের মাত্রা মৃদু হয়; তীব্র খুংরিকাশির ঘটনা বিরল (<১%)৷[৫]

প্রতিরোধ সম্পাদনা

ইনফ্লুয়েঞ্জা এবং ডিপথেরিয়ার টিকা খুংরিকাশি প্রতিরোধ করতে পারে৷[২]

চিকিৎসা সম্পাদনা

যেসব শিশু খুংরিকাশিতে আক্রান্ত তাদের যথাসম্ভব শান্ত রাখতে হয়৷[৪] সাধারণ নিয়মে স্টেরয়েড দেওয়া হয়, তবে রোগের তীব্রতার ক্ষেত্রে এপিনেফ্রিন ব্যবহার করা হয়৷[৪] যেসব শিশুর অক্সিজেন স্যাচুরেশন (রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা) ৯২% এর কম হয় তাদের অক্সিজেন দেওয়া প্রয়োজন৷ [২] এবং যারা তীব্র খুংরিকাশিতে আক্রান্ত তাদের পর্যবেক্ষণে রাখার জন্য হাসপাতালে ভর্তি করা যায়৷ [৩] অক্সিজেনের প্রয়োজন হলে, “ব্লো-বাই” প্রয়োগের (শিশুদের মুখের কাছে অক্সিজেনের উৎস রাখা) পরামর্শ দেওয়া হয়, কেননা এতে অক্সিজেন মাস্ক-এর তুলনায় কম অস্বস্তি হয়৷[২] চিকিৎসায় ০.২% এর কমসংখ্যক মানুষের এন্ডোট্র্যাকিয়াল ইনটিউবেশন(শ্বাসনালিতে টিউব বসানোর) প্রয়োজন হয়৷[৬]

স্টেরয়েড সম্পাদনা

খুংরিকাশির চিকিৎসায় ডেক্সামেথাসোন এবংবিউড্যাসোনাইড এর মত কর্টিকোস্টেরয়েডব্যবহার করা যায়৷[৭] ওষুধ প্রয়োগের মাত্র ছয় ঘণ্টার মধ্যে উল্লেখযোগ্য লাভ পাওয়া যায়৷ [৭] এইসব ওষুধ মৌখিকভাবে (মুখ দিয়ে), প্যারেন্টেরাল পদ্ধতিতে (ইনজেকশন এর মাধ্যমে), বা শ্বাসের মাধ্যমে প্রয়োগ করা যায়, তবে মৌখিকভাবে ওষুধ প্রয়োগই বাঞ্ছনীয়৷[৪] সাধারণত একটি মাত্র ডোজই যথেষ্ট, এবং এটা সাধারণত সম্পূর্ণ নিরাপদ মনে করা হয়৷[৪] ০.১৫, ০.৩ এবং ০.৬ মিগ্রা/কেজি’র ডেক্সামেথাসোনের ডোজও সমান কার্যকর বলে মনে করা হয়৷[৮]

এপিনেফ্রিন সম্পাদনা

সহনীয় থেকে তীব্র খুংরিকাশিতে নেবুলাইজড এপিনেফ্রিন(শ্বাসে টেনে নেওয়ার সলিউশন যা শ্বাসনালি প্রশস্ত করে) উপযোগী হতে পারে৷[৪] এপিনেফ্রিন সাধারণত মাত্র ১০-৩০ মিনিটে খুংরিকাশির তীব্রতা হ্রাস করে, তবে এর উপকারিতা মাত্র ২ ঘণ্টা স্থায়ী হয়৷[১][৪] যদি চিকিৎসার পরে ২-৪ ঘণ্টা যাবৎ অবস্থা ভালো থাকে এবং অন্য কোন জটিলতা না দেখা দেয়, তাহলে সাধারণত ঐ শিশু হাসপাতাল ত্যাগ করতে পারে৷[১][৪]

অন্যান্য সম্পাদনা

খুংরিকাশির চিকিৎসার অন্যান্য পদ্ধতি নিয়ে গবেষণা করা হয়েছে, তবে সেসবের কার্যকারিতার সমর্থনে যথেষ্ট প্রমাণ পাওয়া যায় না৷ উষ্ণ বাষ্প বা আর্দ্র বাতাস নিজে-পরিচর্যা শ্বসন অর্থাৎ শ্বাসে টেনে নেওয়া একটি প্রথাগত চিকিৎসা পদ্ধতি, তবে গবেষণায় এর কোন উপযোগিতা পাওয়া যায়নি[২][৪] এবং বর্তমানে এটা খুবই কম ব্যবহার করা হয়৷[৯] যেসব কাশির ওষুধ-এ সাধারণত ডেক্ট্রোমেথরফ্যান ও/বাগুইয়াফেনেসিনথাকে সেসব ব্যবহারও অনুৎসাহিত করা হয়৷[১] যদিও আগে, শ্বাসপ্রশ্বাসের চাপ কমাতে হিলি-অক্স (হিলিয়াম এবং অক্সিজেন এর মিশ্রণ) ব্যবহার করা হত, তবে এটি ব্যবহারের সমর্থনে অতি সামান্য প্রমাণ পাওয়া যায়৷[১০] যেহেতু খুংরিকাশি সাধারণত ভাইরাসঘটিত, রোগ তাই এর সঙ্গে ব্যাক্টেরিয়ার আশঙ্কা না থাকলে অ্যান্টিবায়োটিকস ব্যবহার করা হয় না৷[১] ব্যাক্টেরিয়াঘটিত সংক্রমণে অ্যান্টিবায়োটিক ভ্যানকোমাইসিন এবং সেফোট্যাক্সিম এর পরামর্শ দেওয়া হয়৷[২] ইনফ্লুয়েঞ্জা এ বা বি সংশ্লিষ্ট গুরুতর ক্ষেত্রে অ্যান্টিভাইরাল নিউরামিনিডেস ইনহিবিটর প্রয়োগ করা যায়৷[২]

আরোগ্যের সম্ভাবনা সম্পাদনা

ভাইরাসঘটিত খুংরিকাশি সাধারণত স্বল্প-কালীন রোগ, খুব বিরল ক্ষেত্রে খুংরিকাশির ফলে শ্বাস বন্ধ হয়ে যাওয়া ও/বা কার্ডিয়াক অ্যারেস্টঅর্থাৎ হৃৎপিণ্ডের কাজ করা বন্ধ হয়ে মৃত্যু ঘটে৷[১] সাধারণত দুই দিনের মধ্যে উপসর্গের ক্ষেত্রে অগ্রগতি হয় তবে সাত দিন পর্যন্ত এই রোগ থাকতে পারে৷[৫] অন্যান্য বিরল জটিলতা দেখা দিতে পারে তার মধ্যে রয়েছে ব্যাক্টেরিয়াল ট্র্যাকিযাইটিস, নিউমোনিয়া, এবংপালমোনারি ইডিমা অর্থাৎ ফুসফুসে শোথ রোগ।[৫]

জনসংখ্যাগত বণ্টন সম্পাদনা

সাধারণত ৬ মাস থেকে ৫-৬ বছর বয়সের, ১৫% শিশুর খুংরিকাশি হয়৷[২][৪] এই বয়স শ্রেণীর হাসপাতালের রোগীদের মধ্যে প্রায় ৫% খুংরিকাশিতে আক্রান্ত হওয়ার ফলে হাসপাতালে ভর্তি হয়৷[৫] বিরল ক্ষেত্রে মাত্র ৩ মাস বয়সের শিশুদের ও ১৫ বছর বয়সের কিশোর কিশোরীদেরও খুংরিকাশি হতে পারে৷[৫] মেয়েদের তুলনায় ছেলেদের এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার ৫০% বেশি সম্ভাবনা থাকে; শরৎকালে খুংরিকাশির প্রকোপ বেশি দেখা যায়৷[২]

ইতিহাস সম্পাদনা

খুংরিকাশির ইংরেজি প্রতিশব্দ “ক্রুপ” (croup) শব্দটির উৎপত্তি আদি আধুনিক ইংরেজি ক্রিয়াপদ “ক্রুপ” থেকে, যার অর্থ “কর্কশ স্বরে কান্নাকাটি করা”; সর্বপ্রথম স্কটল্যান্ডে এই রোগের এই নামকরণ করা হয় এবং ১৮ শতাব্দীতে সর্বসাধারণের মধ্যে প্রচলিত হয়ে ওঠে৷ [১১] হোমার-এর প্রাচীন গ্রীস যুগ থেকে ডিপথেরিয়াজনিত খুংরিকাশির হদিশ জানা যায়৷ ১৮২৬ সালে, ব্রিটোনো ভাইরাসঘটিত খুংরিকাশি এবং ডিপথেরিয়াজনিত খুংরিকাশির মধ্যে প্রভেদের উল্লেখ করেন৷[১২] ফরাসীরা ভাইরাসঘটিত খুরিকাশিকে “ফো ক্রুপ” নামে অভিহিত করত, তারা “ক্রুপ” বলতে ডিপথেরিয়া ব্যাক্টেরিয়াঘটিত রোগ বোঝাত৷ [৯] ফলপ্রসূটিকা আবিষ্কার হওয়ার পর থেকে ডিপথেরিয়ার ফলে খুংরিকাশি প্রায় দেখাই যায় না৷[১২]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. Rajapaksa S, Starr M (২০১০)। "Croup – assessment and management"। Aust Fam Physician39 (5): 280–2। পিএমআইডি 20485713  অজানা প্যারামিটার |month= উপেক্ষা করা হয়েছে (সাহায্য)
  2. Cherry JD (২০০৮)। "Clinical practice. Croup"N. Engl. J. Med.358 (4): 384–91। ডিওআই:10.1056/NEJMcp072022পিএমআইডি 18216359। ৫ জানুয়ারি ২০১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১২ আগস্ট ২০১২ 
  3. "Diagnosis and Management of Croup" (PDF)BC Children’s Hospital Division of Pediatric Emergency Medicine Clinical Practice Guidelines 
  4. Everard ML (২০০৯)। "Acute bronchiolitis and croup"Pediatr. Clin. North Am.56 (1): 119–33, x–xi। ডিওআই:10.1016/j.pcl.2008.10.007পিএমআইডি 19135584  অজানা প্যারামিটার |month= উপেক্ষা করা হয়েছে (সাহায্য)
  5. Johnson D (২০০৯)। "Croup"Clin Evid (Online)2009পিএমআইডি 19445760পিএমসি 2907784  
  6. Klassen TP (১৯৯৯)। "Croup. A current perspective"Pediatr. Clin. North Am.46 (6): 1167–78। ডিওআই:10.1016/S0031-3955(05)70180-2পিএমআইডি 10629679  অজানা প্যারামিটার |month= উপেক্ষা করা হয়েছে (সাহায্য)
  7. Russell KF, Liang Y, O'Gorman K, Johnson DW, Klassen TP (২০১১)। Klassen, Terry P, সম্পাদক। "Glucocorticoids for croup"। Cochrane Database Syst Rev1 (1): CD001955। ডিওআই:10.1002/14651858.CD001955.pub3পিএমআইডি 21249651 
  8. Port C (২০০৯)। "Towards evidence based emergency medicine: best BETs from the Manchester Royal Infirmary. BET 4. Dose of dexamethasone in croup"। Emerg Med J26 (4): 291–2। ডিওআই:10.1136/emj.2009.072090পিএমআইডি 19307398  অজানা প্যারামিটার |month= উপেক্ষা করা হয়েছে (সাহায্য)
  9. Marchessault V (২০০১)। "Historical review of croup"Can J Infect Dis12 (6): 337–9। পিএমআইডি 18159359পিএমসি 2094841   অজানা প্যারামিটার |month= উপেক্ষা করা হয়েছে (সাহায্য)
  10. Vorwerk C, Coats T (২০১০)। Vorwerk, Christiane, সম্পাদক। "Heliox for croup in children"। Cochrane Database Syst Rev2 (2): CD006822। ডিওআই:10.1002/14651858.CD006822.pub2পিএমআইডি 20166089 
  11. Online Etymological Dictionary, croup. Accessed 2010-09-13.
  12. Feigin, Ralph D. (২০০৪)। Textbook of pediatric infectious diseases। Philadelphia: Saunders। পৃষ্ঠা 252। আইএসবিএন 0-7216-9329-6 

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা