কালিবক

পাখির প্রজাতি

কালিবক (বৈজ্ঞানিক নাম: Ixobrychus flavicollis), কালা বগলা বা কালোবক বা চরখুচি[২] Ardeidae (আর্ডেইডি) গোত্র বা পরিবারের অন্তর্গত Ixobrychus (ইক্সোব্রাইকাস) গণের অন্তর্গত এক প্রজাতির কালচে ছোট আকারের জলচর পাখি[৩][৪][৫] দারুণ কুশলী এই বক বুদ্ধিমান-চতুর ও মাছ-ব্যাঙ শিকারে তুখোড়। স্থির, নিশ্চল থাকতে ব্যাপক পারদর্শী এরা। কালিবকের বৈজ্ঞানিক নামের অর্থ হলদেঘাড় ঠকঠকিয়া (গ্রিক: doupetor = ঠকঠক শব্দকারী; লাতিন: flavus = সোনালি-হলুদ, -collis = ঘাড়ের)।[৫] পাখিটি বাংলাদেশ, ভারত ছাড়াও দক্ষিণ, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়াওশেনিয়ার বিভিন্ন দেশে দেখা যায়। সারা পৃথিবীতে এক বিশাল এলাকা জুড়ে এদের আবাস, প্রায় ৮৬ লক্ষ ৯০ হাজার বর্গ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে এদের আবাস।[৬] বিগত কয়েক দশক ধরে এদের সংখ্যা ক্রমেই কমছে, তবে আশঙ্কাজনক পর্যায়ে যেয়ে পৌঁছেনি। সেকারণে আই. ইউ. সি. এন. এই প্রজাতিটিকে ন্যূনতম বিপদগ্রস্ত বলে ঘোষণা করেছে।[১] বাংলাদেশের বন্যপ্রাণী আইনে এ প্রজাতিটি সংরক্ষিত।[৫]

কালিবক
মনোনিত উপপ্রজাতি, Ixobrychus flavicollis flavicollis, শ্রীলঙ্কা
বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস
জগৎ: প্রাণীজগৎ
পর্ব: কর্ডাটা
শ্রেণী: পক্ষী
বর্গ: Pelecaniformes
পরিবার: Ardeidae
গণ: Ixobrychus
প্রজাতি: I. flavicollis
দ্বিপদী নাম
Ixobrychus flavicollis
(Latham, 1790)
প্রতিশব্দ

Dupetor flavicollis

আকার সম্পাদনা

মাপ ৫৮ সেন্টিমিটার। ওজন ৩০০ থেকে ৪২০ গ্রাম পর্যন্ত হয়। মাথার তালু এদের চকচকে স্লেট রঙের। এই রংটি ঘাড়-গলার উপরিভাগ হয়ে সারা পিঠে ছড়িয়ে গেছে কালো রং হয়ে। গলার তলা দিয়ে কমলাটে-নীল চওড়া একটা রেখা ঘাড়ের পাশ দিয়ে বুক অবধি নেমে এসেছে। বুকে খাড়া খাড়া কালচে টান। ঠোঁট লালছে ধূসর। পা ও পায়ের পাতা ঘন বাদামি।[৩]

খাদ্য সম্পাদনা

এরা মাছ, ব্যাঙ, ছোট জলসাপ, পোকা-পতঙ্গ ইত্যাদি খেয়ে থাকে। ঘাসফড়িং এদের অতি প্রিয় খাদ্য।[৩]

স্বভাব সম্পাদনা

এরা নিশাচর। কালিবক সাধারণত ঊষা ও গোধূলি বেলায় শিকার করতে বের হয়। ফুটফুটে জোছনা রাতেও শিকার করতে বের হয়।[৩] কালিবক নিচু গাছ বা ঝোপঝাড়ের শুকনো ডালপালা দিয়ে বাসা করে। চারটি ডিম পাড়ে। ১৮ থেকে ২২ দিনে ডিম ফোটে।[২]

গ্যালারি সম্পাদনা

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "Ixobrychus flavicollis"The IUCN Red List of Threatened Species। ২০১২-১১-১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৩-০৬-১৫ 
  2. "বড়শিতে ধরা পড়ল কালিবক, পরে অবমুক্ত"। দৈনিক প্রথম আলো। ১ নভেম্বর ২০২১। সংগ্রহের তারিখ নভেম্বর ১৪, ২০২১ 
  3. শরীফ খান (০২-১১-২০১২)। "বকের নাম কালিবক"। দৈনিক প্রথম আলো। ২০১৮-০৬-১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৮ জুলাই ২০১৩  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ= (সাহায্য)
  4. রেজা খান (২০০৮)। বাংলাদেশের পাখি। ঢাকা: বাংলা একাডেমী। পৃষ্ঠা ৮২। আইএসবিএন 9840746901 
  5. জিয়া উদ্দিন আহমেদ (সম্পা.) (২০০৯)। বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষ: পাখি, খণ্ড: ২৬। ঢাকা: বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। পৃষ্ঠা ২৯৩–৪। 
  6. "Black Bittern Ixobrychus flavicollis"BirdLife International। ২০১৫-১০-২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৩-০৬-১৫ 

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা