কাঠ বাদাম

উদ্ভিদের প্রজাতি

কাঠ বাদাম (বৈজ্ঞানিক নাম: Terminalia catappa) একটি বৃহদাকৃতির গাছের ফলের বীজ। বীজের নাম অনুযায়ী এই গাছকে কাঠ বাদাম গাছ ডাকা হয়। এটি নিরক্ষীয় অঞ্চলে জন্মানো লেডউড জাতীয় Combretaceae পরিবারের একটি বৃক্ষ। এ গাছের রসালো ফলের অভ্যন্তরে ৩-৪ সেন্টিমিটার দীর্ঘ কয়েকটি বীজ থাকে যা পরিপক্ব ফল থেকে বের করে নিয়ে সরাসরি বা ভেজে খাওয়া হয়। এই বিচিগুলিই কাঠবাদাম নমে পরিচিত। বিচিগুলো বাদামের গন্ধ যুক্ত। কাঠ বাদাম সারা বিশ্বে ভারতীয় বাদাম নামেও পরিচিত।

কাঠ বাদাম
Terminalia catappa
বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস
জগৎ: Plantae
বিভাগ: Magnoliophyta
শ্রেণী: Magnoliopsida
বর্গ: Myrtales
পরিবার: Combretaceae
গণ: Terminalia
প্রজাতি: T. catappa
দ্বিপদী নাম
Terminalia catappa
L.
কাঠ বাদাম গাছ
কাঠ বাদাম ফুল ও ফল

আদি নিবাস সম্পাদনা

কাঠবাদামের গাছের আদি নিবাস কোথায় তা জানা যায় না। এটি আফ্রিকা থেকে দক্ষিণ ও দক্ষিণপূর্ব এশিয়া সহ অস্ট্রেলিয়া অবধি উষ্ণ অঞ্চলে জন্মে থাকে। সাম্প্রতিক কালে আমেরিকা মহাদেশেও এই গাছটি বিস্তার লাভ করেছে। একে নানা নামে বিভিন্ন স্থানে ডাকা হয়, যেমন বেঙ্গল আখরোট, সিঙ্গাপুর আখরোট, ইবেলবো, মালাবার আখরোট, নিরক্ষীয় আখরোট, সমুদ্র আখরোট, ছাতা গাছ, আব্রোফো ন্‌কাটি, জানমান্দি ইত্যাদি।

বিবরণ সম্পাদনা

কাঠ বাদামের গাছ ৩৫ মিটার (১১৫ ফুট) উঁচু হয়। গাছটির উপরের দিক থেকে আনুভূমিকভাবে ডালপালা বের হয়। এর ফলটি রসালো প্রকারের ও ভেতরের প্রকোষ্ঠে কয়েকটি বীজ থাকে। ফল পাকলে এই বিচিগুলো খাবার যোগ্য হয়। বীজগুলো খেতে অনেকটা আখরোটের মতো। গাছের বয়স বাড়লে এর উপরের দিকের ডালপালা অনেকটা চ্যাপ্টা হয়ে যায়, দেখতে ফুলদানীর মতো লাগে। শাখাপ্রশাখাগুলো স্তরে স্তরে সাজানো থাকে। পাতাগুলো আকারে বেশ বড়ো, ১৫-২৫ সেমি (৫.৯ - ৯.৮ ইঞ্চি) দীর্ঘ, এবং ১০-১৪ সেমি (৩.৯-৫.৫ ইঞ্চি) চওড়া, ডিম্বাকার, এবং চকচকে সবুজ বর্ণের হয়[১]। শুষ্ক মৌসুমে পাতা ঝরে যায়। ঝরার আগে পাতাগুলো গোলাপী-লাল বা হলদেটে-খয়েরি রঙের হয়ে যায় (এর কারণ হলো ভায়োলাক্সান্থিন, লুয়েটিন ও যিক্সান্থিন নামের রঞ্জক পদার্থ)।

ব্যবহারিক উপযোগিতা সম্পাদনা

অন্যান্য ব্যবহার সম্পাদনা

  1. ভেজানো বাদাম খাওয়া হৃদয়কে সুস্থ রাখে এবং খারাপ কোলেস্টেরল থেকে মুক্তি দেয় এবং ভাল কোলেস্টেরল বাড়ায়।
  2. ভেজানো বাদাম খেয়ে এতে উপস্থিত ভিটামিন ই অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট হিসাবে কাজ করে। বাদামে উপস্থিত এই উপাদানটি বার্ধক্যজনিত ও প্রদাহকে বাধা দেয় যা ফ্রি র‌্যাডিক্যালগুলির কারণে ঘটে।
  3. প্রতিদিন বাদাম খাওয়া ওজন হ্রাস, কোমর চিকিৎসা হ্রাস এবং স্থূলত্ব প্রতিরোধে সহায়তা করতে পারে। এটি তাত্ক্ষণিক প্রাক-জৈবিক স্বাস্থ্যের কারণে অন্ত্রের স্বাস্থ্যের উন্নতি করে হজম স্বাস্থ্য এবং কার্যকারিতা উন্নত করতে সহায়তা করে।
  4. নিয়মিত সেবন করলে বাদামের স্তন ক্যান্সার, প্রোস্টেট ক্যান্সার, মলদ্বার ক্যান্সার এবং কোলনের ক্যান্সার সহ বিভিন্ন ধরনের ক্যান্সারের প্রতিরক্ষামূলক প্রভাব রয়েছে।
  5. বাদাম খাওয়া হাড়ের ভর ও ঘনত্ব হাড়ের স্বাস্থ্যের উন্নতি করতে সহায়তা করে।
  6. বাদামের সবচেয়ে  উপকারিতা মস্তিষ্কে উন্নতি তে রয়েছে। মস্তিষ্কের কার্যকারিতা উন্নত করার সাথে সাথে আপনার জ্ঞান এবং স্মৃতিশক্তি উন্নত করতেও সহায়তা করে।

ছবি সম্পাদনা

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. দ্বিজেন শর্মা লেখক; বাংলা একাডেমী ; ফুলগুলি যেন কথা; মে, ১৯৮৮; পৃষ্ঠা-১৮, আইএসবিএন ৯৮৪-০৭-৪৪১২-৭