ইভান আগুইলি (আব্দুল হাদি আকিলি) ইংরেজি: Ivan Aguéli ('Abd al-Hadi Aqhili) (মে ২৪, ১৮৬৯ - অক্টোবর ১, ১৯১৭) ছিলেন একজন সুইডিশ পেইন্টার ও লেখক। তিনি ছিলেন মিশরের বিখ্যাত সুফি সাধক শেখ আব্দুর রহমান আল-কবির এর ইউরোপ অঞ্চলে নিযুক্ত খলিফা বা ছুফি প্রতিনিধি (মাকাদ্দেম)। পশ্চিমা বংশোদ্ভূত তিনিই প্রথম ব্যক্তি যিনি নিজে পীর হিসাবে জীবন যাপন করেন। তিনি প্রচ্যের অপর বিখ্যাত সুফি সাধক রেন জুনুনকে সুফি ভাবধারায় আনার পেছনে পীর ও দীক্ষাগুরু হিসাবে ভূমিকা রাখেন [১] এবং ইবনুল আরাবীর সুফি মতার্শ প্রচারে ভূমিকা রাখা তিনিই প্রথম পশ্চিমা বংশদ্ভূত সুফি। আগুইলির লেখা নিবন্ধ ইউনিভার্সেলিটি ইন ইসলাম (ইংরেজি: Universality in Islam) বিশ্বজুড়ে ব্যাপক গ্রহণযোগ্য লাভ করে।

মুসলিম পণ্ডিত
ইভান আগুইলি (আব্দুল হাদি আকিলি)
Ivan Aguéli ('Abd al-Hādī 'Aqīlī)
কায়রোতে ইভান আগুইলি
উপাধিশেখ, "ইউরোপের মাকাদ্দেম"
জন্ম(১৮৬৯-০৫-২৪)২৪ মে ১৮৬৯
সালা, ভাস্তম্যানল্যান্ড, সুইডেন
মৃত্যু১ অক্টোবর ১৯১৭(1917-10-01) (বয়স ৪৮)
লস্পিতালেত দে লোব্রেগাত, কাতালোনিয়া, স্পেন
জাতিভুক্তসুয়েডীয়
যুগহিজরী ১৪শ শতাব্দী
অঞ্চলইউরোপ, মিশর
মাজহাবমালিকি
শাখাShadhili, Malamatiyya
মূল আগ্রহসুফিবাদ, প্রতিচ্ছায়াবাদ, প্রতীক, তুলনামূলক ধর্ম, পশু অধিকার, নৈরাজ্যবাদ
উল্লেখযোগ্য ধারণাগোঁড়া ধর্মীয় আসা বিভেদের, ঐতিহ্যবাদী পদ্ধতি কোর অ-প্রথা ভেঙ্গে আধিবিদ্যক তুলনামূলক বিশ্লেষণ।
লক্ষণীয় কাজÉcrits pour La Gnose (ফ্রান্স)
যাদের দ্বারা প্রভাবিত হয়েছেন
যাদেরকে প্রভাবিত করেছেন

জন্ম ও বেড়ে উঠা সম্পাদনা

ইভান আগুইলির পারিবারিক নাম ছিল জন গুষ্টাফ এ্যাগিলি। তিনি স্যালা নামক সুইডেনের এক ছোট্ট শহরে ১৮৬৯ সালের ২৪ মে জন্ম গ্রহণ করেন। তার পিতার নাম জোহান গ্যাব্রিয়্যাল এ্যাগিলি।

১৮৭৯- ১৮৮৯ সাল পর্যনত স্কটল্যান্ড ও ষ্টকহোমে লেখা পড়া করেন। তার যৌবনের শুরু হতেই ধর্মীয় আধ্যাত্মিকতায় বিষয়ে তার অধীর আগ্রহ প্রকাশ পায়। তিনি ১৮৮৯ সালে ইভান আগুইলি নামধারণ করে প্যারিস পাড়ি জমান। সুইডেনে প্রত্যাবর্তনের পূর্বে ১৮৯০ সালে চলে যান লন্ডনে।[২]

১৮৯০ সালে ষ্টকহোমে ফিরে এসে তিনি আর্ট্ স্কুলে ভর্তি হন। ১৮৯২ সালে তিনি ফিরে যান প্যারিসে। ফরাসী বিপ্লবের সাথে যুক্ত থাকার দায়ে তাকে জেলে যেতে হয় ১৮৯৪ সালে। তাকে ঐতিহাসিক ট্রায়েল অব দি থার্টি এর মামলার মোকাবেলা করতে হয়। কয়েক মাসের মধ্যে ছাড়া পেয়ে তিনি ১৮৯৫ সালে মিশরের উদ্দেশ্যে ফ্রান্স ত্যাগ করেন। সেখানে তিনি পুনরায় ১৮৯৬ সালে প্যারিসে ফেরত আসার পূর্ব পর্যন্ত [৩] অবস্থান করেন। মিশরে বসবাসকালে তিনি ইসলাম ধর্মে দীক্ষিত হয়ে নাম ধারণ করেন আব্দুল হাদি আকিলি। অতপর ১৮৯৯ সালে বর্তমান শ্রীলঙ্কার কলম্বো ভ্রমণ শেষে ফ্রান্সে ফিরে আসেন ১৯০০ সালে।[৪]

মিশর সম্পাদনা

ইভান আগুইলি পুনরায় ১৯০২ সালে কায়রোতে ফেরত গিয়ে তৎকালীন আল-আরাবীয়া সাধিলিয়া তরীকার মিশরীয় পীর শেখ আব্দুর রহমান ইলিয়াছ আল-কবিরের (১৮৪০-১৯২১) নিকট মুরীদ হন [৫] অর্থাৎ দীক্ষা গ্রহণ করেন। সে বছর ১৯০২ সালেই সর্বপ্রথম পশ্চিমা-ইউরোপিয়ান ছাত্র হিসাবে ভর্তি হন আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ে, যেখানে তিনি আরবী ভাষা ও ইসলামী দর্শন বিষয়ে প্রতিষ্ঠানিক পড়াশোনা করেন।[৬]

স্বীয় পীর শেখ ইলিয়াছের অণুকম্পায় তারই মুরীদ আগুইলি এবং অপর ইসলাম গ্রহণকারী ইতালীয় সাংবাদিক শিষ্য (মুরীদ) এ্যানরিকো ইসাবেতো (১৮৭৮-১৯৬৩) ইতালীয়: ইল কনভিটো (আরবী: আল-নাহদি) নামের একটি ইতালীয় ম্যাগাজিন/সাময়িকী কায়রোতে প্রকাশ ও প্রতিষ্ঠা করেন (১৯০৪-১৯১৩)।

মৃত্যু সম্পাদনা

উসমানীয় সাম্রাজ্যের গুপ্তচর সাব্যস্ত করে ১৯১৬ সালে তাকে পাঠিয়ে দেয়া হয় স্পেনে। স্পেনে আগুইলি এতটা আসহায় ছিলেন যে, সেখান হতে সুইডেনে ফেরত যাওয়ার মত আর্থিক সামর্থ্য ছিলনা তার। তিনি খালি হাতেই স্পেন হতে সুইডেন ফেরার পথে বার্সেলোনার অদূরে ল’হোসপিটালেট ডি ল্লোব্রিগেট নামক গ্রামের রেল ক্রসিংয়ে অক্টোবর ০১, ১৯১৭ সালে চলন্ত ট্রেনের ধাক্কায় নিহত হন।[৭]

আরও দেখুন সম্পাদনা

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. ওয়াটারফিল্ড, পৃ:২৯ (Waterfield, p.২৯)
  2. গুফ্ফিন ১, পৃ:৬৭ (Gauffin I, p.৬৭)
  3. গুফ্ফিন ১, পৃ:১৩১ (Gauffin I, পৃ:১৩১)
  4. গুফ্ফিন ২, পৃ:৪২ (Gauffin II, পৃ:৪২)
  5. আমকভিষ্ট, পৃ:১৭-১৯ (Almqvist, পৃ:১৭-১৯)
  6. গুফ্ফিন ২, পৃ:১২১ (Gauffin II, পৃ:১২১)
  7. ব্রুম্মার, পৃ:৬৩-৬৪ (Brummer, পৃ:৬৩-৬৪)