অ্যান বনি

নারী জলদস্যু
(অ্যানি বনি থেকে পুনর্নির্দেশিত)

অ্যান বনি (৮ মার্চ, ১৭০২ - ২২ এপ্রিল, ১৭৮২) ছিলেন একজন আইরিশ মহিলা যিনি পরবর্তীতে বিখ্যাত জলদস্যুতে পরিণত হন। তিনি মূলত ক্যারিবীয় সাগরে তার অভিযান পরিচালনা করতেন।[১] তার জীবনী সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত যে তথ্য পাওয়া যায় তা মূলত চার্লস জনসনের অ্য জেনারেল হিস্টোরি অফ দ্য পাইরেটস বই থেকে সংগৃহীত।

অ্যান বনি
— জলদস্যু —
জলদস্যুদের নিয়ে লিখিত চার্লস জনসনের বইয়ে অ্যান বনি।
ডাকনামঅ্যান
ধরনজলদস্যু
জন্ম(১৭০২-০৩-০৮)৮ মার্চ ১৭০২
জন্মস্থানকিনসেল, আয়ারল্যান্ড
মৃত্যু২২ এপ্রিল ১৭৮২(1782-04-22) (বয়স ৮০)
আনুগত্যনাই
কার্যকাল?–অক্টোবর ১৭২০
অপারেশনের বেজক্যারিবীয়

প্রারম্ভিক জীবন সম্পাদনা

বনির জীবন সম্পর্কে খুব কম জানা যায়, বিশেষ করে বাহামা পৌঁছার পূর্বে তার সম্পর্কে প্রায় কিছুই জানা যায় না। তবে মনে করা হয় তিনি ৮ মার্চ, ১৬৯৭ - ১৭০০ সালের মধ্যে আয়ারল্যান্ডের কোন এক জায়গায় জন্মগ্রহণ করেন। সরকারি নথি ও সমসাময়িক তথ্য-উপাত্ত থেকে পাওয়া তথ্য ও বিশেষ করে আধুনিক যুগে চার্লস জনসনের অ্য জেনারেল হিস্টোরি অফ দ্য পাইরেটস বই-ই (সমসাময়িক জলদস্যুদের জীবনী নিয়ে লিখিত, প্রথম সংস্করন বিশুদ্ধ, দ্বিতীয় সংস্করন অনেকটা গবেষণামূলক) মূলত তার জীবনীর উদৃতি দেওয়ার একমাত্র সূত্র।[২][৩]

বনির পরিবার নতুন বাসস্থার খুঁজে তার যখন বয়স খুবেই কম তখনই ভ্রমণ শুরু করে। প্রথম দিকে তাদের নতুন বাসস্থান খুঁজে পেতে অনেক বেগ পেতে হয়। উত্তর আমেরিকা পৌঁছার কিছুদিনের মধ্যে তার মা মৃত্যুবরণ করেন। তার পিতা আইনজীবী হিসেবে প্রতিষ্ঠা পাবার চেষ্টা করেন কিন্তু খুব বেশি সাফল্য পননি। অবশেষে তার বাবা অধিক লাভজনক বণিক ব্যবসাতে যোগদান করেন এবং তাদের পরিবারের ভাগ্য পরিবর্তন হতে শুরু করে।[৪] নথি-পত্র থেকে পাওয়া তথ্য মতে, বনি লাল চুলের অধিকারীণী ছিলেন এবং তাকে ভাল বলেই গণ্য করা হত। কিন্তু তিনি অতন্ত্য উগ্র মেঝাঝের ছিলেন ও ১৩ বছর বয়সে টেবিল ছুড়ি দিয়ে তিনি এক চাকরাণীকে আঘাত করেছিলেন।[৩] তিনি জেমস বনি নামে দরিদ্র একজন নাবিককে বিয়ে করেন, যিনি অল্প কিছুদিন জলদস্যুতা পেশার সাথে জড়িত ছিলেন।[৫] জেমস বনি তার শ্বশুরের সম্পত্তি পাওয়ার প্রত্যাশা করতেন কিন্তু অ্যানের বাবা অ্যানিকে তার সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করেন।

এরকম গল্প প্রচলিত আছে অ্যান প্রতিশোধ হিসেবে তার বাবার বাগানে আগুন ধরিয়ে দেন কিন্তু এই অভিযোগের ব্যাপারে তেমন প্রমাণ পাওয়া যায়নি। যাইহোক, এটি জান গিয়েছিল যে ১৭১৪ ও ১৭১৮ এর মাঝামাঝি সময়ে অ্যান ও তার স্বামী নিউ প্রোভিডেন্স দ্বীপপুঞ্জের নাসাউ-এ চলে আসেন। এ স্থানটি তখন ইংরেজ জলদস্যুদের আশ্রয়স্থল হিসেবে পরিচিত ছিল।[৬] সেখানকার অনেক বাসিন্দারাই রাজার সাধারণ ক্ষমার আওতায় পরেছেন আবার অনেককেই আইনের মুখমুখি হতে হয়েছিল। এও জানা যায়, ১৭১৮ সালে সরকারের ওউডস রজার জাহাজ এখানে পৌঁছলে, জেমস বনি সরকারের সংবাদদাতা হিসেবে নিযুক্ত হন।[৭]

গণসংস্কৃতিতে সম্পাদনা

  • ১৯৫১ সালের ২০তম ফক্স সেঞ্চুরির চলচ্চিত্র অ্যান অফ দ্য ইন্ডিসে অ্যানির চরিত্র চিত্রিত হয়েছে।
  • পাইরেট হেল নামক গানে অ্যানকে ক্যাপ্টেন অফ দ্য শীপ বলে উল্লেখ করা হয়।
  • ক্যারি ভেগণ লিখিত ২০১১ সালের উপন্যাস স্টিলে অ্যান বনি ও মেরি রিড দুজনের চরিত্রই উল্লেখ করা হয়।
  • অ্যান বণিকে ইউবিসফ্ট-এর আসন্ন গেম অ্যাসাসিন’স ক্রিড ৫: ব্ল্যাক ফ্ল্যাগ-এ দেখা যাবে।
  • ক্যাথি রিচের উপন্যাস সিজারে অ্যান বনির উল্লেখ রয়েছে।
  • ব্লিন্ড সিম্পসনের মিউজিকাল কমেডি হট গ্রোগের প্রধান চরিত্র হল, অ্যান, রিড, ব্ল্যাকবিয়ার্ড ও জ্যাক রেকহাম।
  • নিউ ইয়ার্ক ভিত্তিক ব্যান্ড দল টাইগারিসের জলদস্যুদের নিয়ে প্রকাশিত অ্যালবাম এভরিবডি উইনস! -এর দ্বিতীয় গানটি হল দ্য লিজেন্ড অফ অ্যান বনি
  • হিথার গ্রাহামের গোস্ট সেডুতে অ্যান বনির উল্লেখ রয়েছে।
  • এলিজাবেথ গ্যারেটের দ্য সুইট ট্রেড বই-এর প্রধান চরিত্রগুলো হল, কালিকো জ্যাক, অ্যান বনি ও মেরি রিড।
  • জলদস্যুতা নিয়ে লিখিত উপন্যাস অন স্ট্রেনঞ্জার টাইডস -এর গৌন একটি চরিত্রের নাম অ্যান বনি।
  • টেলিভিশন সিরিজ ব্ল্যাক সেইলস -এ অ্যান বনির চরিত্রটিতে অভিনয় করেছেন ক্লারা প্যাগেট
  • চেরি প্যাগ-এর বই ম্যারি রিড - সেইলর, সোলজার, পাইরেট -এর প্রধান চরিত্র অ্যান বনি ও মেরি রিড।

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. Carlova (1964)
  2. Encyclopædia Britannica Online
  3. Meltzer (2001)
  4. Johnson (1725)
  5. Lorimer (2002), pg. 47
  6. Sharp (2002)
  7. Woodard, Colin (২০০৭)। The Republic of Pirates। Harcourt, Inc। পৃষ্ঠা 139, 316–318। আইএসবিএন 978-0-15-603462-3। ৪ জানুয়ারি ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৬ মে ২০২০ 

গ্রন্থপঞ্জি সম্পাদনা

ওয়েবসাইট

বই

  • Carlova, John (১৯৬৪)। Mistress of the Seas। Citadel Press। 
  • Commire, Anne (২০০২)। "Read, Mary and Anne Bonney"। Women in World History: A Biographical Encyclopedia। Gale। আইএসবিএন 078764062X  অজানা প্যারামিটার |coauthor= উপেক্ষা করা হয়েছে (|author= ব্যবহারের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে) (সাহায্য)
  • Cordingly, David. "Bonny, Anne (1698–1782)", Oxford Dictionary of National Biography, Oxford University Press, 2004. Accessed 18 Nov 2006.
  • Johnson, Captain Charles, ed. Hayward Arthur L., A history of the robberies and murders of the most notorious pirates from their first rise and settlement in the island of Providence to the present year, London: George Routledge & Sons, Ltd. First published in 1724, with the second edition published 1728, both versions attributed to Daniel Defoe. The two editions are very different, with the second edition much less accurate than the first when compared to court records. In the second edition however, no such accuracy is even attempted. In particular,the lurid details of the capture of the merchant ship the Neptune by Charles Vane in September 1718, conflicts entirely with the court records of both Charles Vane and Robert Deal, his quartermaster.
  • 'The Tryals of Captain John Rackam and Other Pirates', 1721, by Robert Baldwin, in The Colonial Office Records in The Public Records Office at Kew, (ref: CO 137/14f.9). This details the trials of JackRackam, Mary Read, Anne Bonny, and Charles Vane.
  • Lorimer, Sara (২০০২)। Booty: Girl Pirates on the High Seas। San Francisco: Chronicle Books।  অজানা প্যারামিটার |coauthor= উপেক্ষা করা হয়েছে (|author= ব্যবহারের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে) (সাহায্য)
  • Meltzer, Milton (২০০১)। Piracy & Plunder: A Murderous Business। New York: Dutton Children's Books। আইএসবিএন 0-525-45857-3  অজানা প্যারামিটার |coauthor= উপেক্ষা করা হয়েছে (|author= ব্যবহারের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে) (সাহায্য)
  • Reichs, Kathy (২০১১)। Seizure 
  • Pugh, Cherie (2008) 'Mary Read- Sailor, Soldier, Pirate'
  • Sharp, Anne Wallace (২০০২)। Daring Pirate Women। Minneapolis: Lerner Publications।